জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রয়াত নব্বই দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা ও বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় (Joy Banerjee)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ । বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে সোমবার সকালে ১১টা ৩০ মিনিটে প্রয়াত হন অভিনেতা। অভিনয় জগত থেকে রাজনীতির অঙ্গন সাফল্য জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে ব্যর্থতাও ছিল তাঁর সঙ্গী।
ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি তাঁর টান ছিল। ১৯৮২ সালে বিদেশ সরকার পরিচালিত ‘অপরূপা’ ছবিতে দেবশ্রী রায়ের বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। এরপর তিনি বহু জনপ্রিয় বাংলা ছবিতে অভিনয় করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘নাগমতি’, ‘চপার’, ‘অভাগিনী’, ‘হীরক জয়ন্তী’, ‘মিলন তিথি’, এবং ‘সিঁথির সিঁদুর’। নব্বইয়ের দশকে তিনি তাপস পাল, শতাব্দী রায়, রঞ্জিত মল্লিক, চিরঞ্জিত চক্রবর্তী এবং মহুয়া রায়চৌধুরীর মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ করে খ্যাতি অর্জন করেন। নয়ের দশকে পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর হীরক জয়ন্তী ছবি তাঁকে বক্স অফিসে প্রথম সাফল্য এনে দেয়। জনপ্রিয় ছিল জয় ও চুমকি চৌধুরীর জুটি। একসঙ্গে মাত্র ২টো ছবিতে অভিনয় করেই ঝড় তুলেছিলেন তাঁরা।
তবে শুধু পর্দায় নয়, পর্দার পিছনেও চুমকী চৌধুরীর প্রেমে পড়েছিলেন জয়। তবে সেই সম্পর্ক টেকেনি। দুই পরিবারের সম্মতি থাকা সত্ত্বেও তাঁদের মনোমালিন্যে সেই সম্পর্ক ভাঙে। প্রেম বিচ্ছেদের পর পর্দায় আর জুটিতে কাজ করেননি তাঁরা। পরবর্তীতে ব্যাক্তিগত জীবনের প্রভাবে চুমকীর সঙ্গে আর কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুতাপও করেছিলেন অভিনেতা। এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, চুমকীর সঙ্গে তখন কাজ করলে আরও অনেক জনপ্রিয় ছবিতে তিনি কাজ করার সুযোগ পেতেন কারণ অঞ্জন চৌধুরী তাঁকে পছন্দ করতেন। জয় বিয়ে করেছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলার ও অভিনেত্রী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যয়কে, তবে সেই বিয়েও টেকেনি। পরবর্তীতে তিনি বিয়ে করেন অঙ্কিতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
একটা সময়ের পর অভিনয় থেকে দূরে সরে যান অভিনেতা। পা রাখেন রাজনীতিতে। ২০১৪ সালে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) যোগ দেন এবং বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০১৯ সালেও তিনি উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন, কিন্তু উভয় নির্বাচনেই তিনি পরাজিত হন। জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বিজেপি রাজ্য কমিটির সদস্য। ২০২১ সালের নভেম্বরে, অভিনেতা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন যে তিনি আর বিজেপির প্রতিনিধিত্ব করবেন না।
জানা যায়, দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি। ভুগছিলেন তীব্র শ্বাসকষ্ট জনিত অসুস্থতা, COPD-র সঙ্গে চলছিল লড়াই। গত ১৫ অগাস্ট তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৭ অগাস্ট দেওয়া হয় ভেন্টিলেশনে।তবে শেষরক্ষা হল না জয়ের। রয়ে গেলেন দ্বিতীয় স্ত্রী ও মা। এদিন হাসপাতাল থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে আসা হয় তাঁর তারাতলার বাড়িতে। সোমবারই অভিনেতার শেষকৃত্য। জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন তাঁর টলিউডের সহকর্মী ও বন্ধুরা। শোকপ্রকাশ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে বিজেপির একাধিক নেতা-নেত্রী।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)